1. abrajib1980@gmail.com : মো: আবুল বাশার রাজীব : মো: আবুল বাশার রাজীব
  2. abrajib1980@yahoo.com : মো: আবুল বাশার : মো: আবুল বাশার
  3. farhana.boby87@icloud.com : Farhana Boby : Farhana Boby
  4. mdforhad121212@yahoo.com : মোহাম্মদ ফরহাদ : মোহাম্মদ ফরহাদ
  5. shanto.hasan000@gmail.com : রাকিবুল হাসান শান্ত : রাকিবুল হাসান শান্ত
  6. masum.shikder@icloud.com : Masum Shikder : Masum Shikder
  7. shikder81@gmail.com : Masum shikder : Masum Shikder
  8. riyadabc@gmail.com : Muhibul Haque :

শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অলআউটে তৃণমূল, ৭ তারিখ পশ্চিম মেদিনীপুরে যাচ্ছেন মমতা

  • Update Time : রবিবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২০
  • ১৬৩ Time View

বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা: শুভেন্দু–ধাক্কায় তৃণমূল যে বাস্তবিকই বেসামাল, তার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে দলনেত্রী থেকে শীর্ষনেতাদের অতিসক্রিয়তায়। যদিও শুভেন্দু অধিকারী এখনও দল ছেড়ে যাননি। বিধায়ক পদেও ইস্তফা দেননি। শুধু মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন, আর ছেড়ে দিয়েছেন দুটি সরকারি পদ। তার পরেই তৃণমূলের অভ্যন্তরে যে তৎপরতা শুরু হয়েছে, তাতে অনেকেই মনে করছেন, বিশাল ধাক্কা আসতে চলেছে দলের সামনে। সেই ধাক্কা সামাল দিতেই এত সক্রিয়তা সকলের মধ্যে।

এ বিষয়ে মাঠে নেমেছেন স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৭ ডিসেম্বর থেকেই তিনি জেলা সফর শুরু করে দিচ্ছেন। আর সেই সফর শুরু হচ্ছে শুভেন্দুর খাসতালুক পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে। ৭ তারিখে তিনি সভা করবেন মেদিনীপুর কলেজ মাঠে। সেখান থেকে তাঁর বর্ধমান যাওয়ার কথা রয়েছে। পাশাপাশি বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান জেলায়ও যাবেন তিনি। রাজনৈতিক মহলের মতে, বেশ কিছুদিন আগে দলবিরোধী কাজে যুক্ত দলের নেতাদের সতর্ক করে মমতা বলেছিলেন, ‘ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে মেপে নেব।’ তাই শুভেন্দু চলে গেলে দলে যে ক্ষত তৈরি হবে, তা পূরণ করতে প্রতিটি জেলাকে নিজের কড়া নজরে নিয়ে আসতে চলেছেন দলনেত্রী। বাংলার রাজনীতি বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা, শুভেন্দু এবং তাঁর অনুগামীদের এবার ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে মেপে নিতে চাইছেন তিনি। সেই সূত্র ধরেই আগামী ৪ ডিসেম্বর প্রতিটি জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন তিনি। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠক হবে। শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ছাড়ার পরের পরিস্থিতিকে তৃণমূল কতখানি গুরুত্ব দিচ্ছে, তার প্রমাণ পাওয়া গেল শনিবার। ৭ ডিসেম্বর মমতার সভার আটদিন আগেই এদিন মেদিনীপুরে পৌঁছে যান সুব্রত বক্সি। এদিন মমতার সভার রেইকি করেন তিনি। এ ছাড়া পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের বিধায়ক এবং ব্লক সভাপতিদের নিয়ে তিনি বৈঠকও করেন।

এদিকে, শুভেন্দুর ছবি দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই ‘আমরা দাদার অনুগামী’ বলে পোস্টার পড়ছে প্রায় গোটা রাজ্যেই। এমনকী, দার্জিলিংয়েও সেই পোস্টার দেখা গিয়েছে। এর পাল্টা অনুগামীও তৈরি করে ফেলেছে তৃণমূল। রাতারাতি তৈরি করা হয়েছে ‘দিদির সঙ্গে’ লোগো। সোশ্যাল মিডিয়ার ডিপি থেকে টি–শার্টেও শোভা পাবে এই লোগো। এ ব্যাপারে একটি স্লোগানও তৈরি করে ফেলেছে শাসক দল। লেখা হচ্ছে, ‘আওয়াজ উঠেছে বঙ্গে/ আমরা দিদির সঙ্গে।’ সোশ্যাল মিডিয়াতে এই স্লোগান, লোগো ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে ‘দিদিই আসছে’ বলেও বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার পড়তে শুরু করেছে। বিধায়ক পদে ইস্তফা না দিলেও দলনেত্রীর নির্দেশে তাঁকে বাদ দিয়েই নির্বাচনের দিকে এগোনোর পরিকল্পনা করে ফেলেছে দল। দলের নেতাদের শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অলআউটে যাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ সবের পাশাপাশি দলের মধ্যেই কিছু নেতা যেন নিয়ম করে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তোপ দেগে চলেছেন। যেমন শনিবার ফের শালীনতার সীমা অতিক্রম করে শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমরা চাই যত কালো রক্ত আছে, সব বিজেপিতে যোগ দিক।’ আবার খানাকুলের নন্দনপুরে তৃণমূলের এক সভায় শুভেন্দুকে নিশানা করে কল্যাণ বলেন, ‘বেইমানদের শিক্ষা দিতে হবে। যারা মমতার নাম করে ভোগ করেছে, তাদের শিক্ষা দিতে হবে। যারা বলবে, দাদার অনুগামী, তাদের এমন শিক্ষা দেবেন, তারা যেন গ্রামে ঢুকতে না পারে।’

তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল এদিন কোনও রাখঢাক না করে স্বীকার করে নিয়েছেন, ‘‌বিধানসভা ভোটের মুখে শুভেন্দু যদি দল ছেড়ে যান, তা হলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে। তা ছাড়া, সত্যি কথা হল, শুভেন্দুর অনেক ফলোয়ার রয়েছে দলের মধ্যেই। দলের বাইরেও অনেকে তাঁকে মেনে চলে।’ শুভেন্দুর পথে যাবেন কিনা, তা না জানালেও ইতিমধ্যে উত্তর থেকে দক্ষিণবাংলা, সব জায়গাতেই অনেক বিধায়কই সাহস করে নিজেদের অসন্তোষের কথা জানাচ্ছেন। এই তালিকায় রয়েছেন ব্যারাকপুরের শীলভদ্র দত্ত, ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদার, দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের প্রাক্তন বিধায়ক সত্যেন রায়–সহ আরও বেশ কয়েকজন বিধায়ক অথবা প্রাক্তন বিধায়ক। তৃণমূলের তরফে কড়া নজর রাখা হয়েছে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কাটোয়া, মেমারি, জামালপুর, মন্তেশ্বর–সহ আরও কয়েকটি কেন্দ্রের বিধায়কদের দিকে। এই নজর রাখার কথা ঘুরিয়ে স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ–সভাধিপতি দেবু টুডুও।

এদিকে, শুভেন্দু পরবর্তী পরিস্থিতিতে মালদায় দলের হালহকিকত জানতে বৈঠক ডেকেছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু বৈঠকে গরহাজির ছিলেন সাংসদ মৌসম বেনজির নুর, বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র এবং জেলা কো–অর্ডিনেটর মানব বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও দলের তরফে এই বৈঠককে রুটিন বৈঠক বলা হয়েছে এবং অনুপস্থিত নেতা ও নেত্রীদের বৈঠকে না থাকার কারণও বলা হয়েছে। তবু বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা থেমে থাকেনি। উল্লেখ্য, এই বৈঠকে হাজির ছিলেন তৃণমূলের বিতর্কিত রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর। বৈঠকে শুভেন্দু প্রসঙ্গ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরি। তবে তৃণমূল ছাড়ার যে ইঙ্গিত রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যাচ্ছে, সেই প্রসঙ্গে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এদিন বলেছেন, ‘আগামিদিনে জোড়াফুলে শুধু জোড়া মালিকই থাকবে।’

এদিকে, শুভেন্দুর সঙ্গে সূত্র মারফত বিজেপি যোগাযোগ রেখে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেবেন কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেননি। পাশাপাশি তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্ত এক প্রকার নিয়ে নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। একটি সূত্র জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার তিনি নাকি বিধায়ক পদে ইস্তফা দিতে পারেন। এক বিজেপি নেতা জানিয়েছেন, শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ভালোই রয়েছে। তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কয়েকদিন পর বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলে জানা গিয়েছে। এদিন সাংসদ সৌগত রায়ের সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল শুভেন্দুর। কিন্তু ‘মা অসুস্থ’ এই কারণ দেখিয়ে বৈঠক বাতিল করেছেন শুভেন্দু। ফলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে তৃণমূলের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। অন্যদিকে, শুভেন্দুর ছবি দিয়ে তাঁর অনুগামীদের হোর্ডিং এদিন দেখা গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, ক্যানিং পূর্ব, গড়িয়া, ঘুঁটিয়ারি শরিফ, সোনারপুর, বারুইপুর–সহ বিভিন্ন অঞ্চলে।

রবিবার মহিষাদলে শুভেন্দুর অরাজনৈতিক সভা রয়েছে। তার আগে শনিবারই দেখা গিয়েছে, এলাকার পর এলাকা শিবসেনার পতাকা ও পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে। এই ঘটনা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে শুভেন্দু অধিকারী শিবসেনায় যোগ দেবেন, এমন সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছে বাংলার রাজনৈতিক মহল। তবে মহিষাদলে শুভেন্দু কী বার্তা দেন, আপাতত সেই দিকেই তাকিয়ে গোটার বাংলার রাজনীতি পর্যবেক্ষকরা।

Please Share This Post in Your Social Media

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ দেখুন..